অবৈধ দখলে অভিশপ্ত ঢাকা বিমানবন্দর ফুটপাত
এমএবি সুজন, বিশেষ প্রতিনিধি, মুক্তমন রিপোর্ট, ঢাকা: আধিপত্য বিস্তারের লড়াই। লক্ষ লক্ষ টাকার অবাধ চাঁদাবাজি। ফুঁশে উঠছে আগুনমূখা রাজনীতি, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ চক্র ও পুলিশ প্রশাসন। ত্রিমূখী সংঘর্ষের সমূহ সম্ভাবনায় ভীতসন্ত্রস্ত ফুটপাতবাসী। যথাযথ কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন শান্তিপ্রিয় মানুষেরা। রাজনৈতিক দালাল ও চিহ্নিত লাইনম্যান চক্র জান্নাত-আলমের নেতৃত্বে প্রকাশ্যে চলিত চাঁদাবাজি, সন্ত্রাসী কর্মকান্ড, দৈনিক প্রায় ১০০০ ওয়াট চোরাই বিদ্যুৎ চড়াদামে বিক্রি ও মাদক ব্যবসায় বাণিজ্যে অতিষ্ট অসহায় ফুটপাতবাসী। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগের সুদৃষ্টি আকর্ষণ ও তৃতীয়বারের মত দৃষ্টান্তমূলক হস্তক্ষেপ ভাঙচূর অভিযান দাবী করে অবৈধ দখল ও চাঁদাবাজমুক্ত ফুটপাত চায় বিব্রত ভূক্তভোগীরা। রাজধানী ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের আওতায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বাংলাদেশ সড়ক ও জনপদ বিভাগের অতি প্রয়োজনীয় জায়গা ও চলাচলে বাঁধাগ্রস্ত অসহায় পথচারীদের ফুটপাত দখলে অবৈধ সারিসারি ১০০টি জাতবেজাতের দোকানপাঠ ও ব্যস্ত বাণিজ্যিক এক কথায় এখানে বিপজ্জনক কর্মক্ষেত্র গড়ে উঠেছে। দৃশ্যতঃ ঢাকা বিমানবন্দর মনলোভা হোটেল থেকে পাবলিক টয়লেট পার হয়ে কসাইবাজার প্রবেশ মুখ বরাবর এই অবৈধ স্থাপনাগুলো দেখতে অশোভন তবুও রঙবাহারে শোভা পাচ্ছে অসহ্য দিনেরাতে বিশেষকরে গাড়ি মেরামত ওয়ার্কশপসমূহ, হাওয়া মেশিন ও চাকার দোকানপাঠ, কয়েকটি খাবার হোটেল ও ১৫টি দূরপাল্লা বাস কাউন্টারের মাধ্যমে নানা অপরাধমূলক চাঁদাবাজি, রাজনৈতিক দোহাই দিয়ে অন্যায় সন্ত্রাসী কর্মকান্ড এবঙ মাদকসহ অন্যান্য চোরাচালান অব্যাহত রয়েছে বলে গোপন সূত্রে জানা যায়। জানা যায়, অবৈধ জায়গায় অনৈতিক ব্যবসায় পজিশন বিক্রয় বাণিজ্য, দোকানপ্রতি দৈনিক গড়ে ৭০০ টাকা হারে ভাড়া আদায়, অবৈধ সংযোগে দৈনিক প্রায় ৬ হাজার টাকার চোরাই বিদ্যুৎ বিল কালেকশন করে ঐ টোকাই থেকে উঠে আসা প্রয়োজনে পাশে ঢাকা বিমানবন্দর এলাকায় রাজনৈতিক দালাল খ্যাত জান্নাত-আলম গং। এখানে ব্যক্তিগতভাবে আলম ৪টি ও জান্নাত ৫টি করে অবৈধ দোকানের মালিকমূলে অবৈধ দখলে ভোগ করছে অঢেল পকেট বাণিজ্য। অবৈধ দোকানগুলোর ভাড়াটিয়া ও মালিকসূত্রে জানা গেছে, রোডস এন্ড হাইওয়ে কতৃপক্ষ উচ্ছেদ করার পর পুনরায় দোকান বসাতে দোকান প্রতি সেলামী নেয়া হয়েছে ২০ হাজার টাকা করে। আবার প্রতি দিনের ভাড়া ও বিদ্যুৎ বিল ছাড়াও গত মাসের ২৫ তারিখের মধ্যে আদায় করেছে দোকান প্রতি বাধ্যতামূলক ৫০ হাজার টাকা করে মোট ৫ লাখ আর তা থেকে ৩ লাখ টাকা দেয়া হয়েছে সড়ক ও জনপদ বিভাগের দপ্তরে। সড়ক ও জনপদ বিভাগে প্রতিমাসে টাকা না দিলে দোকান ভাঙ্গারী অভিযান আসবে বলে ভয় দেখায়, প্রয়োজনে মারধর করে দোকানের ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা ছিনিয়ে নেয় আলম ও জান্নাত। সবপদের টাকা উঠানো ছিটানো সব করে ঐ আলম আর জান্নাত। আলম ও জান্নাতের মন খুশি করতে না পারলে দোকান ছোট করতে হয়, নির্যাতন সইতে হয় এমনকি দোকান হারাতেও হয়। যেমনঃ ১ লাখ টাকা করে অফেরতযোগ্য সেলামী নিয়ে ইতিমধ্যে কয়েকটি দোকান বিভিন্ন মালদার পার্টির কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানায় আলমের খুব বিশ্বস্ত কাছের কয়েকজন ব্যবসায়ী। ধারাবাহিক তথ্য সংগ্রহকালে একজন চাকার দোকানের মালিক বলেন, ওরা দোকানে দোকানে শাসাইছে, সাংবাদিকের কাছে কেউ উল্টাসিদা কইলে তোরাও মরবি সাংবাদিকদেরও এলাকা ছাড়া করমু। ওরা কারা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ওরা বলতে ফুটের নেতা আলম আর জান্নাত। তবে এই রিপোর্টের বিষয়ে সরাসরি আলাপচারিতায় আলম ও জান্নাত উভয়ে সাংবাদিকদের ভয়ভীতি প্রদর্শণ ও হুমকি ধমকির বিষয়টি কৌশলে অস্বীকার করে বলে জানায় গণমাধ্যম কর্মীরা। এই অবৈধ স্থায়ী হাটবাজার সম্পর্কে অন্যতম সিনিয়র লাইনম্যান আলম জানান, এখানে দোকান উঠলে টিকায়া রাখতে হলে বিমানবন্দর থানা, পুলিশ বক্স, বিমানবন্দর রাজনীতি নিয়ন্ত্রণকারী নেতারা, RAB-1, APBN ব্যাটালিয়ান, ট্রাফিক বক্স অফিস ও উত্তরা জোন অফিস, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন, কিছু নামকরা সাংবাদিকসহ সড়ক ও জনপদ বিভাগকে রাজিখুশি ম্যানেজ করি। গরীবগুরা মানুষ কইরা খায় তাদের ভাত মারা কেমন সাংবাদিকতা? পারলে যাদের নাম কইছি তাদের ধরেন। তারা যদি ছাড় দেয় তবে এই গরীব দোকানগুলা ভালভাবে বাঁচে। আলম বলেন, এখানে আমার দোকান মাত্র ১টা তবে জান্নাতের মোট কয়টা তা বলা যাবেনা কারন কিছুটা টেকনিক্যাল প্রভলেম আছে। জাতীয় বিদ্যুৎ চোরাকারবারী জান্নাতের ভাষ্য এমন এই ফুটে আমি বিদ্যুৎ এর বিষয়টা দেখি মিমাংসা করি। এখানে আমার নিজস্ব কোন দোকান নাই। দোকান কার কয়ডা কারা মালিক তার সব হিসাব নিকাশ মাপ দাগ খতিয়ান আলম এর হেফাজতে। জান্নাত বলেন, ফুটপাতে সব অসহায় মানুষ, পাবলিক টয়লেটের ভিতরে যান দেখেন কতকি ১ডজন গাড়ীর ওয়ার্কশপ লক্ষ লক্ষ টাকার কত অবৈধ বাণিজ্য। বিমানবন্দর পাবলিক টয়লেট কেন্দ্রিক বিদ্যুৎ, পানি, খাবার হোটেল, গ্যরেজ ও ওয়ার্কশপসমূহ নিয়ন্ত্রণকারী এক সময়ের চিহ্নিত দূরন্ত সাইকেল চালক হরেকরকম মদ সাপ্লাইয়ার তাজা তাইজুল ইসলাম ওরফে সাইকেল তাজু ওরফে বাংলা তাজু ওরফে টয়লেট তাজু বলে জানায় বিভিন্ন সূত্র। সর্বসাধারণের দাবী, ঢাকা বিমানবন্দর ফুটপাত ও বিশাল জনপদ; চিরনিরাপদ, শান্তিপূর্ণ ও সম্পূর্ণ অবৈধ দখলমুক্ত চাই। কেননা এখানে আধিপত্য বিস্তারের লড়াই বেগবান। লক্ষ লক্ষ টাকার অবাধ চাঁদাবাজি ও কালোটাকার খেলামেলা। চেনাজানার ভীড়ে সন্দেহভাজন অচেনা অজানাদের অনৈতিক গতিবিধি ও ভাড়াটে সন্ত্রাসীদের নির্ভীক পদচারণায় ক্রমশঃ ফুঁশে উঠছে আগুনমূখা রাজনীতি, সন্ত্রাসী চাঁদাবাজ চক্র ও পুলিশ প্রশাসন। ত্রিমূখী সংঘর্ষের সমূহ সম্ভাবনায় ভীতসন্ত্রস্ত ফুটপাতবাসী। তাই যেকোন অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত রক্তক্ষরণ এড়াতে যথাযথ কতৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেন শান্তিপ্রিয় মানুষেরা।